সোমবার, মার্চ ১৭, ২০২৫

পা র মি তা চ্যা টা র্জি

  • এবার ঘরে যাই
  • ২০২৫-০২-১০ ০৯:৪৩:৪৭

এষার কথাঃ--
চেনা পথে হাঁটতে হাঁটতে চলে এসেছি অনেক দূর,
বার বার পিছনে ফিরে চাইছে অবাধ্য মনটা,
তাকে বেঁধে রেখেছি নীরবের একট খুটিতে।
এই লাল মাটির হাওয়ায়,
পলাশ বনের ফাঁকে ,
একদিন খুজে পেয়েছিলাম ভালবাসাকে।
আমার যৌবনের প্রথম এই প্রেমকে,
নীল আকাশের কোলে
রুক্ষ মাটির তলায়
রঙতুলি দিয়ে এঁকেছিলাম।
কত ঋতু পেরিয়ে গেল
সে কি আর থাকে
কবে মুছে গেছে।
তাই কি ?
সত্যি মুছে গেছে?
তবে আজ এতোদিন পর
রাঙামাটির খাঁজে খাঁজে
পলাশ ফুলের বুকে চিরে,
সেই গন্ধ কেন পেতে চাইছি?
জানিনা ----,
আমি নিজেই জানিনা--,
কেন ছিঁড়ে ফেলেছিলাম জীবন আঙিনা থেকে
প্রথম বসন্তের ফোটা ফুলটিকে।
আজো আমার ভালবাসা , আমার প্রেম অভিমানে
মুখ ঘুরিয়ে আছে , আমি তা জানি---।
কিন্তু কি করে তাকে বোঝাব
শুধুমাত্র নিশ্চিত ভবিষ্যতের আশায়
সেদিন আমি মেরে ফেলিনি ভালোবাসাকে।
আমি যে একটা অসহায় মেয়ে,
উপেক্ষা করতে পারিনি
বাবার শাষন আর মায়ের চোখের জলকে।
তাই সেদিন শুধু ভালবাসা নয়,
আমার সমস্ত অস্তিত্বকে বলি দিয়েছিলাম নির্মম ভাবে।
তুমি আমায় বুঝলেনা---,
ভুলে বোঝা এক ভারকে বয়ে নিয়ে চলছ---।
নিজেও কষ্ট পাচ্ছ আমিও কষ্ট পাচ্ছি---।
একবার সামনে এস---,
আমায় একবার বলার সুযোগটা দাও----,
কেন সদিন তোমার আমার ভালবাসাটা মরে গিয়েছিল?
আমি মেনে নিচ্ছি বাবার শাষন অগ্রাহ্য করতে পারলেও
মায়ের চোখের জলকে উপেক্ষা করার ক্ষমতা আমার ছিলনা
তাই সেদিন নিজেকে বলি দিয়েছিলাম।

সুজয়ের কথাঃ----
কি করে পারলে এষা?
এতো প্রেম এতো ভালবাসাকে মেরে ফেলে
শুধুমাত্র সুখের জন্য বড়লোক স্বামীর হাত ধরে চলে গেলে?কেমন করে এতো নিষ্ঠুর হলে?
হয়তো মেয়েরা এমনই হয়, জানিনা ----,
আমি আজো প্রত্যেক বসন্তকালে
আমাদের ভালোবাসার ছবিগুলো
নিত্যনতুন ফুলে সাজিয়ে রাখি,
তুমি জানতে পারোনা--।
রাতের আকাশে তারাদের তুমি ভেবে
অনেক মনের কথা বলি,
তুমি শুনতে পাওনা---,
বসন্তের বাতাসে গায়ে
তোমার গন্ধ খুঁজে বেড়াই
তুমি ধরা দাওনা,
শুধু পালিয়ে বেড়াও
আর আমায় কাঁদাও---।
হ্যাঁ আজ তোমার বড়লোক স্বামী
তোমাদের এখানকার বাড়ীতে
আমায় চা খেতে যেতে বলেছেন,
যাব গিয়ে তোমার সুখ দেখে আসব----।

এষার বাড়ীতে সুজয়ের প্রবেশঃ--
একি ; এই বাড়ীতে যে শুধু; আমার মনটাকে উপরে ফেলেই
এষা সাজিয়েছে, কিন্তু কেন?
কেন এই পরিহাস?
আমাকে কি দেখাতে চাইলে এষা
আমি কত অক্ষম,
শুধু ইচ্ছেকে আঁকতেই জানি
তাকে রূপ দিতে পারিনা।
এষা;--
না সুজয় না----,
আমার বিয়ের পর তোমার আমার ভালোবাসার প্রতিটি কথা---
আমাদের প্রতিদিনের ইচ্ছে, কল্পনা সব আমার স্বামীকে জানিয়েছিলাম,
তিনি বড় ভালমানুষ,
তাঁর তো কোন অপরাধ নেই---,
তাই আমি তাকে ঠাকাতে পারিনি--।
আমি তোমায় ভালোবাসি জেনেও,
তিনি উজার করে আমায় ভালবেসেছেন,
আজ আমায় এইখানে এনেছেন
কেন জান?
কেন?
তুমি যদি আমায় এখনও চাও ,
তোমার কাছে আমায় ফিরিয়ে দেবেন বলে,
সে কি;
হ্যাঁ---, তিনি নিজের অধিকার ছেড়ে দেবেন।
নির্বাক সুজয় প্রশ্ন করল ----
তুমি কি চাও?
আমি তোমার কাছে ফিরে আসতে চাই,
তোমার স্বামীর জন্য কষ্ট হবেনা?
হবে । নিশ্চয় হবে।
তাকে ভালো না বাসতে পারলেও
তাঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধা কৃতজ্ঞতাকে অস্বীকার করতে পারিনা।
আমিতো তাঁকে কিছুই দিতে পারিনি----,
আমার মন শরীর এখনও তোমার অপেক্ষায় আছে---।
সুজয়ঃ---
না এষা না---,
আমি হেরে গেছি,
তোমার স্বামীর ভালোবাসার কাছে আমি হেরে গেছি,
আমিতো এতো উদার নই----,
এই উদার ভালোবাসাকে তুমি অস্বীকার করনা---,
এ অন্যায় এ পাপ---।
এষাঃ তাহলে?
তুমি এই নিঃস্বার্থ ভালোবাসার কাছে আত্মসমর্পন কর-----,
আমায় ভুলে যাও----।
সুজয় ছুটে বেড়িয়ে গেল।
তখন সন্ধ্যা হয়নি---,
পাখীগুলো সব নীড়ে ফিরছে,
রাখাল গরুগুলোকে নিয়ে গোঠে ফিরছে,
কাজ সেরে সবাই যে যার ঘরে ফিরছে---,
এষা তার স্বামীর হাত ধরে বলল---,
চল এবার আমরা আমাদের ঘরে যাই----,
স্বামী তার অশ্রুহীন সুন্দর মিখের দিকে একবার তাকালেন---,
এষার পিঠে হাত রেখে বললেল--,
চল ঘরে যাই।।


এ জাতীয় আরো খবর