সোমবার, ফেব্রুয়ারী ১৭, ২০২৫

সুখী মানুষ কে?

  • জাহাঙ্গীর বাবু
  • ২০২৪-০৪-০২ ২২:৩৪:১৪

কিছুই মনে নেই আবার আবছা আবছা মনে পড়ছে ৮৩/৮৪/৮৫ সালের  চতুর্থ, পঞ্চম অথবা ৬ষ্ঠ শ্রেনীর বাংলা বইয়ের সুখী মানুষের তালাসের সেই গল্পে নেংটী পরা নগ্ন দেহের একাকী বনে বাস করা সেই কাঠুরিয়াকে লেখক সুখী মানুষ লিখেছিলেন।
রাজা বা জমিদারে মনে শান্তি বা চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন ছিলো সুখী মানুষের গায়ের জামার।সারা রাজ্য খুঁজে একজন সুখী মানুষ না পেয়ে বনে এক লোককে পাওয়া যায়।তাকে প্রশ্ন করা হয় তিনি সুখী কিনা?  তিনি বলেছিলেন তিনি সুখী মানুষ। তার কাছে অর্থের বিনিময়ে হলেও তার পুরাতন জামা নিতে চাইলেন রাজা বা জমিদারের পাইক, পেয়াদা, লোকেরা। 
কুড়ে ঘরে বাস করা কাঠুরিয়া হেসে বলেছিলো, তারতো জামা নেই। 
আমি প্রায় বলি ধর্মীয় নিষেধাজ্ঞা আর চারিত্রিক সং্খলন রোধে বিয়ে জরুরি কিংবা বৃদ্ধ বয়সে উত্তারাধিকার এর আকাঙ্ক্ষা না হলে বিয়ের কোন প্রয়োজন ছিলোনা। অগাধ ধন সম্পদের মালিক হয়েও পারিবারিক সুখ সোনার হরিণ। চাহিদা আকাঙ্ক্ষা,হিংসা,তুলনা,ঠকবাজি,ইর্ষা,অহংকার পারিবারিক সাংসারিক জীবনে স্বার্থপরতার গোলকধাঁধা। 
জন্ম, মৃত্যু,বিয়ে এই আল্লাহর হুকুমেই হয়।তাও অবস্থা দৃষ্টে মাঝে মাঝে মনে হয়ে বোকা ছেলেরা বিয়ে করে। আবার চালাক মেয়েরা বিয়ে করে। যত দিন পরিবারে সকল ভাইয়ের বিয়ে সম্পাদন শেষ না হয় তত দিন টেনে টুনে একটা পরিবার লেংড়িয়ে,খুঁড়িয়ে চলে। কফিনের শেষ পেরেক শেষ ভাইয়ের বিয়ের পরই ঠোকা হয়ে যায়। ভাগবাটোয়ার হক না হকের কিচ্ছায় সুখ সুখ সুড়সুড়ির শেষ পর্যায়। আর যদি সবাই শিক্ষিত শ্রেনীর অতি ভদ্র ইতর শ্রেনীর হয় হেদা হেদি ভেদা ভেদি মাংতা মাংতি হয়তো হয়না,সুক্ষ কারচুপির ভোটের মতো এইখানে পারসিয়ালিটিও হয়। ছিলাম সুখের গল্পে তাই সুখী মানুষের জামা খুঁজছিলাম।
জীবনের চড়াই উৎরাইয়ে পুরুষ শাপের ছোবল থেকে বেঁচে,শিয়ালের চতুরামির জাল ছিড়ে বুকের ভেতর অসীম যন্ত্রণা লাঞ্চনা নিয়ে পরিবার চালায়। অনেক কিছু বলে অনেক কিছু চেপে যায়।দুররবল হৃদপিন্ড নিয়ে অপরের পিন্ডি চটকায়।
আল্লাহ যার ভাগ্যে যতটুকু রেখেছেন তাতে সন্তুষ্টি না থাকা এক প্রকার শিরকি গুনাহ।আল্লাহর কাছে বলি আল্লাহ তুমি তোমার কুদরতি উসিলায় আমার সকল সমস্যার সমাধান করে দাও। দোয়া মুনাজাত শেষ হতে না হতেই মানুষ হয়ে মানুষের অর্থ সম্পদ জমি জমা নিয়ে টানা টানি ।কেঊ ঠকায়,কেউ ঠকে। দুইজনেই হয়ে গুনাহগার।কারন যে কষ্ট পাচ্ছে, ঠকছে সে আল্লাহর কাছে বিচার দিয়ে লানৎ দিচ্ছে।আবার যে ঠকাচ্ছে সেতো হক মারছে,সেও আল্লাহর কাছে সত্যের মোহর ঠুকছে ।তাহলে দোয়া, মুনাজাতে আল্লাহর কুদরতি মেহেরবানি যে চাওয়া হলো তার সাথে দ্বৈত নীতি বা মুনাফেকি বা গুনাহ হয়ে গেল।
যাক,অত বড় আলেম নই।ভুল ব্যাখ্যা দিলে যুক্তি তক্কে হেরে যাব। অতি সাধারন মানুষ আমি। অল্প বুঝি। আল্লাহর কাছে বলি আমার দ্বারা যেন কোন উপকার না হোক ক্ষতি যেন না হয়।
পারিবারিক সুখ নষ্ট হয় নানা কারনে। তার মধ্যে আমার মনে হয় এমন কিছু  কারন, সেটি হলো, আমি যা বলি, করি, করছি তাই ঠিক,তাই সত্য,তাই অধিকার,তাই ন্যায্য পাওনা,উত্তরাধিকার হক,আল্লাহর হুকুম, মানে আই এম Right বাকী সব wrong.এই সব বিবেচনায় তখন হাদিস,  দলিল আইন কানুন সব নিজের মতো। মানবতা,বিবেক বোধ নিজের মতো। পঞ্চাশোর্ধ আর পঁচিশের তখন বাটোয়ার বরাবর।ত্যাগ তিতিক্ষা দায়িত্ব কর্তব্য বরাবর।
 সংসারে দু এক জন কেঁনডা  বা ঘাউরা পুরুষ আর বহিরাগত আগত নারীরাই হিসেব কষে কড়ায়,গন্ডায়।বাকী পুরুষের মাথায় বা ভাবনায় না আসলেও, ভাবনায় এনে দেয়। যেমন বিয়ের পর দিন থেকেই শুরু তুমি মরে গেলে আমার কি হবে?
বিয়ের পর দিন থেকে স্বামীর মৃত্যু কামনা। এ যেন অলিখিত এক মৃত্যু পরোয়ানা।তোমার মৃত্যুর আগে সব ভাগ বাটোয়ারা দলিল লিখে দিয়ে যাও।তোমার ভাইয়েরা আমার সন্তাদের ঠকাবে! তুমি না থাকলে আমায় এই বাড়িতে ঢুকতে দিবেনা!  
অথচ তিন শব্দের বন্ধন কবুল,আর তিন শব্দের বিচ্ছেদ এর এক আশ্চর্য ক্ষমতা সম্পন্ন শব্দের সম্পর্কের বন্ধন।সে শব্দের বিরুদ্ধে আবার মামলা মোকাদ্দমা অধিকার আন্দোলন হয় হচ্ছে হবে।নির্যাতিতারাই পুরুষের হৃদ যন্ত্র হাতের মুঠোয় লয়ে হয়ে যান সত্যবাদি,সতী,সাধ্বী, অগ্নিনারী।
কতিপয় পুরুষ সেতো এসেছে মানসিক,শারিরীক ভাবে নির্যাতিত হতে এসেছ্র ভবের রঙ্গ তামাশায়।

 


এ জাতীয় আরো খবর