বৃহস্পতিবার, নভেম্বর ৬, ২০২৫

বিশ্বকাপ থেকে শিক্ষা নিয়ে নতুন স্বপ্নে জ্যোতিরা

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • ২০২৫-১০-২৯ ১০:০৯:৫১
ছবি: সংগৃহীত।

বাংলাদেশ নারী দলের স্বপ্ন ছিল আকাশ ছোঁয়ার। লড়াইও করেছেন মন-প্রাণ উজাড় করে। কিন্তু অভিজ্ঞতার ঘাটতি আর প্রস্তুতির সীমাবদ্ধতায় প্রত্যাশা পূরণ হয়নি তাদের। ৮ দলের ওয়ানডে বিশ্বকাপে সপ্তম স্থানেই শেষ করতে হয়েছে জ্যোতিদের।
শুরুটা ছিল আশাব্যঞ্জক-পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় পেয়ে বিশ্বকাপে উড়ন্ত সূচনা করেছিল বাংলাদেশ। এরপর ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচগুলোতেও জয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্নায়ুচাপে হার মানে দল। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে অবিশ্বাস্য পরাজয়ে স্বপ্নভঙ্গ হয়। ভারতের বিপক্ষে শেষ ম্যাচে পয়েন্ট ভাগাভাগির মাধ্যমে শেষ হয় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ যাত্রা।
দেশে ফিরে অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি জানান, কেবল বার্তা নয়, এখন লক্ষ্য বড় অর্জন। তার ভাষায়, “একটা বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ছয় মাসে হয় না। অন্য দলগুলো দুই বছর আগেই প্রস্তুতি শুরু করে। আমাদেরও সেই পরিকল্পনা নিতে হবে। এই দলটার সামর্থ্য আছে, শুধু পরিণত ক্রিকেট খেলাটা আয়ত্ত করতে হবে। যদি মানসিকভাবে আরও শক্ত হতে পারি, সেমিফাইনাল খেলা আমাদের নাগালের বাইরে থাকবে না।”
বিশ্বকাপের আগে টানা ছয় মাস কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলার কারণে প্রস্তুতিতে ঘাটতি ছিল—এটিও স্বীকার করেছেন অধিনায়ক। তিনি বলেন, “দল হিসেবে আমরা যদি ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দিতে পারি, তাহলে বড় দলগুলোকেও হারানো সম্ভব। অনেক ম্যাচেই আমাদের জয়ের সুযোগ ছিল, কিন্তু আমরা তা কাজে লাগাতে পারিনি। দীর্ঘদিন আন্তর্জাতিক ম্যাচ না খেলার প্রভাবই হয়তো সেখানে পড়েছে।”
অভিজ্ঞতার ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে হলে নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও মানসিক প্রস্তুতির ওপর গুরুত্ব দিতে হবে বলে মনে করেন জ্যোতি। তিনি বলেন, “বড় টুর্নামেন্টে কঠিন সময়গুলো সামলাতে শিখতে হয় ম্যাচের ভেতরেই। আমাদের সেই অভিজ্ঞতা আরও বাড়াতে হবে।”
ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স নিয়েও সন্তুষ্ট নন অধিনায়ক। ৭ ম্যাচে মাত্র ১৫৭ রান করেছেন তিনি, যার মধ্যে একটিমাত্র ফিফটি। নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে জ্যোতির আক্ষেপ, “আমি আমার সেরাটা দিতে পারিনি। আমার অফ-ফর্ম দলকেও ভুগিয়েছে। যখন আমি ভালো খেলি, তখন দলের স্কোরও ভালো থাকে। এবার সেটা হয়নি-এটা আমার ব্যর্থতা।”
তবে হতাশার মধ্যেও ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। এখন থেকেই পরবর্তী বিশ্বকাপের জন্য পরিকল্পনা নিতে চান জ্যোতি ও তার সতীর্থরা। লক্ষ্য, প্রস্তুতিকে আরও বিস্তৃত করা, অভিজ্ঞতা বাড়ানো এবং মানসিক দৃঢ়তা গড়ে তোলা।
বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল হয়তো এবার কাঙ্ক্ষিত ফল পায়নি, কিন্তু তাদের লড়াই, আত্মবিশ্বাস ও উন্নতির আকাঙ্ক্ষা ভবিষ্যতের জন্য আশার আলো দেখাচ্ছে। অভিজ্ঞতা আর ধারাবাহিকতা যোগ হলে, সেই ‘আকাশ ছোঁয়া’ স্বপ্নও হয়তো একদিন বাস্তব হবে।

কীওয়ার্ডস: বাংলাদেশ নারী দল, নিগার সুলতানা জ্যোতি, নারী বিশ্বকাপ ২০২৫


এ জাতীয় আরো খবর