লাইফ স্টাইল ডেস্ক: সব অপূর্ণ ইচ্ছায়ই অগণিত অনেক ইচ্ছা থাকে। তাই প্রত্যেক মানুষই স্বশাসিত, অন্যের শাসনতন্ত্র তাঁর পছন্দ নয়। তাই প্রতিটি সম্পর্কে শৃঙ্খলা থাকা খুব জরুরি। আর না হয় রাজার খেতাবও খোয়ানোর একটা আশঙ্কা থাকে। আমরা সরাসরি কাউকে ‘আপনি অনেক সুন্দর/ সুন্দরী’ এমন কথা বলতে পারি না।
তবে আপনার শাড়িটা অনেক সুন্দর, দারুণ, আপনার সঙ্গে চমৎকার মানিয়েছে—এসব কথা মূলত কৌশলী কথা, যা আমার মোটেও ভালো লাগে না। অচল ধ্যানের এখন আর কোনো দাম নেই। আজকাল মানুষ সবকিছু বাজিয়ে নেয়, ভালোবাসা, ভালো লাগা থেকে সব, সবকিছু।
তবে আমি বলি কি, পূর্ণমাত্রায় যাওয়ার আগে খেয়াল রাখুন যেন বেখেয়াল না হয়ে যান। আমি পুরোনো দিনের মরচে ধরা মানুষ, তাই নিজের পছন্দমতো পরিবেশ না পেলে কোনো কিছুতেই তৃপ্তি পাই না। ফলে সারা দিন বড়শি নিয়ে বসে থেকে মানুষ পায় বড় বড় মাছ আর দিন শেষে আমি পাই কাঁকড়া। মূলত ভালোবাসার জন্য দুটো মন লাগে, একমনে কখনোই ভালোবাসা হয় না।
ভালোবাসায় সমমনস্ক হওয়াটা খুবই জরুরি আর তা না হলে তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘তাসের ঘর’–এর শৈলীর ভুলভাল কথার কারণে ‘সুখের সংসার খান খান হয়ে গেল’–এর মতো অবস্থা হবে। মানুষ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণী কিন্তু সুখ খোঁজে না। আবার এ মানুষই কাগজের মালা বানাতেও কৌশল শেখে আগে। তবে বই পড়ে, সূত্র মুখস্ত করে, কৌশলী হয়ে সবকিছু মোকাবিলা করা যায় না। জীবনের প্রতিটি অধ্যায়কে সেমিস্টারের মতো সাজিয়ে নিন। তাহলেই দেখবেন, মৃত্যুকালে সমরেশ বসুর মতো অসমাপ্ত উপন্যাস ‘দেখি নাই ফিরে’ রেখে যেতে হবে না আর। যা–ই হোক, কিছু কন্ডিশনাল লাভ (ভালোবাসা) তো আছেই, সেগুলো ট্রাফিক লাইটের মতো লাল, নীল, সবুজ। সেগুলো থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকুন। কেবল তুলনা শেষ হলেই কাউকে ভালোবাসতে শুরু করুন, পোষা যন্ত্রণা নিয়ে কিংবা আপনার দুর্দশার সময় কাউকে ভালোবাসতে যাবেন না।
কেননা জীবনযাপনটাই যথেষ্ট নয়, ভালোবাসতে হবে পরিমাণ ছাড়া। আপনি যা চান, তা হতে হবে স্পষ্ট এবং আন্তরিক। ভালোবাসায় কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলবে না। কেননা প্রত্যেকেই চায় তাঁর জীবন নিজের মতো করে চালাতে।
মানুষ পরাজিত হতে পছন্দ করে না। তবে প্রত্যেকেই একটা সম্মানজনক ফলাফল পেতে চায়। ভালোবাসার মানুষটির ভেতর অভ্যন্তরীণ বিশ্বাস আপনাকেই তৈরি করতে হবে। আমার যত্ন যদি আমার চেয়ে অন্যে বেশি নিতে না পারে, তাহলে প্রেম করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা মানুষ সব সময় একা, সেরা সময়টা মানুষ একা থাকতেই বেশি পছন্দ করে। নির্ভরযোগ্য মনের মতো মানুষ না পেলে শূন্যস্থান শূন্য রাখুন। তবুও দুঃখের ওজন বাড়িয়ে লাভ নেই। কেননা মানুষ আজকাল ঝরঝরে, চকচকে হৃদয় চায়। অস্থিরতা ও চঞ্চলতা ভয়ংকর এবং বিড়ম্বনা বাড়ায়। একবার একা থাকা থাকতে শিখে গেলে দেখবেন, এর চেয়ে বড় আনন্দ আর কিছুতে নেই। আপনি যে ভাষা ব্যবহারকারীই হোন না কেন, লাগাম নিজ হাতে রাখুন। ভালোবাসা যদি আরামদায়ক না হয়, তাহলে কুকুরের মতো কামড়াবে না, কিন্তু ঘেউ ঘেউ করবে।
শরীফুল আলম, হাডসন, নিউইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র