রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধি:- সুইট কর্ন বা মিষ্টি ভূট্টা। আর এই মিষ্টি ভূট্টা প্রথমবার পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করেই এলাকায় চমক দেখিয়েছেন সোহেল রানা নামের এক তরুণ কৃষক।
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পৌরশহরের বাসিন্দা সোহেল রানার সুইট কর্নের চাষ এবং ফলন নিয়ে এলাকায় চলছে কৃষির নতুন আলোচনা।
কৃষক সোহেল রানা জানান,উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ১০ শতাংশ জমির মিষ্টি ভূট্টা চাষাবাদে সকল খরচ স্পেন বাংলাদেশ এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানি বহন করেছে। মাত্র ৯০ দিনের মধ্যে মোচা সংগ্রহ করায় ফলন পেয়েছি ৩০ মণ। ১২ টাকা কেজি দরে ৩০ মণ ভূট্টা বিক্রি করে ১৪ হাজার ৪০০ টাকা পেয়েছি। এতে
আমার শুধু নিড়ানি ও পানি দেওয়া এবং মোচা তোলা বাবদ আড়াই হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। এমনকি এ ফসল বিক্রয়ের কোন ঝামেলা নেই।
কৃষক আব্দুল খালেক বলেন, এই ভূট্টা কাঁচা অবস্থায় খোসাসহ বিক্রয় করা হয়। এতে ওজন বেশি পাওয়া যায়। প্রতিটি গাছে দুই থেকে তিনটা মোচা ধরে। ভূট্টার ফসল আগাম সংগ্রহ করা যায় । আগামী বছর আমিও এই ভূট্টা চাষাবাদ করব বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন।
সুইট কর্ন একটি উচ্চ মূল্যের গুণগত মান সম্পন্ন উন্নত ভূট্টার জাত। এটির ফলনও অনেক বেশি এবং এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টিগুণ। কাঁচা অবস্থায় এই ভূট্টা সংগ্রহের ফলে গাছটিকে সাইলেজ করে গো-খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয় বলে জানা যায়।
স্পেন বাংলাদেশ এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড মাল্টিন্যাশনাল এক্সপোর্ট কোম্পানির ফিল্ড অফিসার মির্জা আসাদুজ্জামান জানান, সুইট কর্ন আবাদে অন্য জাতের ভূট্টার তুলনায় অর্ধেক সময় লাগে। আমরা সরাসরি কৃষকের জমি থেকে ভূট্টার সবুজ মোচা ১২ টাকা কেজি দরে ক্রয় করি। এটি ফ্যাক্টরিতে প্রক্রিয়াজাত করে স্পেন, চায়না, আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হবে। কৃষক যদি ভালোভাবে পরিচর্যা করে তবে এই ভূট্টা শতকে ১৪০ থেকে ১৫০ কেজি উৎপাদন করা সম্ভব এটি একটি লাভজনক ফসল বলে জানান তিনি।
রাণীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শহীদুল ইসলাম বলেন, এই প্রথম স্পেন বাংলাদেশ এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কোম্পানির এর পক্ষ থেকে রাণীশংকৈল উপজেলায় মিষ্টি ভূট্টার একটি প্রদর্শনী দেয়া হয়েছিল। আর এই প্রদর্শনীর ফসল অল্প সময়ের মধ্যেই তোলা যায়। এমনকি সেই জমিতে আবার অন্য ফসল চাষাবাদ করা যায়। এতে কৃষক দু দিক থেকেই লাভবান হয়।
তিনি বলেন, পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি নতুন ফসল সুইট কর্নের আবাদ যদি আগামীতে আরোও বৃদ্ধি করতে পারি তাহলে কৃষকেরা অনেক উপকৃত হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।