ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৫
বিশ্বব্যাপী সম্মানিত ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রধান ও ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রপ্রধান পোপ ফ্রান্সিসের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ সরকার। তার প্রতি সম্মান জানিয়ে বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) থেকে শনিবার (২৬ এপ্রিল) পর্যন্ত দেশজুড়ে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বুধবার রাতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শোক পালনের অংশ হিসেবে এই তিন দিন দেশের সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। পাশাপাশি, পোপ ফ্রান্সিসের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনার আয়োজনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পোপের প্রতি সম্মান ও সম্প্রীতির বার্তা
বাংলাদেশ সরকারের এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক মহলে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের একটি শক্তিশালী বার্তা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পোপ ফ্রান্সিস ছিলেন শান্তির বার্তাবাহী, মানবতা ও পরিবেশ রক্ষার পক্ষে দৃঢ় কণ্ঠ। তার মৃত্যুতে বিশ্ববাসী এক মহান ধর্মীয় ও মানবিক নেতাকে হারাল।
সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে শোকবার্তা পাঠানো হয়েছে ভ্যাটিকান সিটিতে। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকেও গভীর শোক ও সমবেদনা জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশে পোপ ফ্রান্সিসের প্রভাব ও উপস্থিতি
উল্লেখ্য, পোপ ফ্রান্সিস ২০১৭ সালে বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। সে সময় তিনি খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের পাশাপাশি মুসলিম, হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠক করেন। রোহিঙ্গা সংকটে তার মানবিক অবস্থান এবং শরণার্থীদের প্রতি সহমর্মিতা বাংলাদেশিদের হৃদয়ে স্থায়ী ছাপ রেখে যায়।
আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত
বাংলাদেশে পোপের মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা একটি বিরল ঘটনা। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনা এবং বিশ্ব ধর্মীয় নেতাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নজির স্থাপিত হলো।
ধর্মীয় ও নাগরিক সমাজের নেতারা সরকারের এই সিদ্ধান্তকে সময়োপযোগী ও মানবিক হিসেবে স্বাগত জানিয়েছেন। তারা মনে করেন, এই শোক পালনের মধ্য দিয়ে বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষদের সঙ্গে বাংলাদেশ আরও এক কাতারে একাত্মতা প্রকাশ করলো।