বৃহস্পতিবার, মার্চ ২৭, ২০২৫

স্বনামধন্য কন্ঠশিল্পী ফরিদা ইয়াসমিনের অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী আজ

  • এ কে আজাদ
  • ২০২৩-০৮-০৮ ০০:৫৯:৩৮

ফরিদা ইয়াসমিন। কন্ঠশিল্পী।বেতার-টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের একজন জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী ছিলেন। আধুনিক বাংলা, উর্দু গান ও গজল 
সবধরণের গানই তিনি গেয়েছেন। তাঁর সুরেলা কন্ঠমাধুর্যে সঙ্গীত বোদ্ধাদের অভিভূত করেছেন অনায়াসে। স্বনামধন্য এই কন্ঠশিল্পীর অষ্টম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। তিনি ২০১৫ সালের ৮ আগস্ট, ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। বরেণ্য এই সঙ্গীতশিল্পীর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।

No description available.

ফরিদা ইয়াসমিন ১৯৪১ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে, জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পৈতৃক বাড়ি সাতক্ষীরা জেলার, মুকুন্দপুর গ্রামে। পিতার নাম খান বাহাদুর মোঃ লুৎফর রহমান (সাবেক ডিএম) এবং মাতার নাম মোসামৎ মৌলদা খাতুন (উচ্চাঙ্গ সংগীত শিল্পী)। তাঁরা  পাঁচ বোন, পাঁচ বোনের মধ্যে চার বোনই সঙ্গীতশিল্পী। অন্যরা হলেন জনপ্রিয় ও খ্যাতনামা কন্ঠশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন, নীলুফার ইয়াসমিন ও ফওজিয়া ইয়াসমিন।

No description available.

বাবার চাকরি সূত্রে শৈশবে ফরিদা ইয়াসমিন বাবা-মায়ের সঙ্গে নারায়ণগঞ্জে বসবাস করতেন। সেখানেই শিল্পী দুর্গা প্রসাদ রায়ের কাছে গান শেখা শুরু করেন। মায়ের কাছ থেকেও তিনি গান শিখেছিলেন।  ১৯৫৮ সাল থেকে তিনি নিয়মিত রেডিওতে গান করা শুরু করেন। অল্পদিনেই   জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। 

ওস্তাদ মতি মিয়ার কাছে গান শিখতেন ফরিদা ইয়াসমিন। তাঁর সহযোগিতায় 'এ দেশ তোমার আমার' চলচ্চিত্রের একটি গানে কন্ঠ দেয়ার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কন্ঠশিল্পী হিসেবে অভিষেক ঘটে ফরিদা ইয়াসমিনের। এহতেশাম পরিচালিত ছবিটি মুক্তিপায় ১৯৫৯ সালে।
তিনি আরো বেশ কিছু চলচ্চিত্রে কন্ঠ দেন। রাজধানীর বুকে, জোয়ার এলো, চাঁন্দা, এই তো জীবন, রাজা এলো শহরে, একালের রূপকথা, অনেক দিনের চেনা, গোধূলীর প্রেম, কাগজের নৌকা, ঘূর্ণিঝড়, বিচার, উত্তরণ, পিঞ্জর, প্রভৃতি ছবিতে কন্ঠ দিয়েছেন ।

No description available.

ফরিদা ইয়াসমিনের গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে- তুমি জীবনে মরণে আমায় আপন করেছো.., তোমার পথে কুসুম ছড়াতে এসেছি.., খুশির নেশায় আজকে বুঝি মাতাল হলাম..., জানি না ফুরায় যদি এই মধুরাতি..,
 ডেকো না ডেকো না ও পাখি...., দুটি পাখি একটি নীড়..., ডেকো না ডেকো না ও পাখি..., প্রদীপ জ্বললে যদি ঘর আলো হয়... সে আসবে আজ আসবে... ইত্যাদি । 

ব্যক্তিগত জীবনে ফরিদা ইয়াসমিন ১৯৬২ সালে, অনুবাদক, প্রকাশক এবং লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন-এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের সংসারে দুই পুত্র ও এক কন্যা রয়েছে। প্রখ্যাত পরিসংখ্যানবিদ, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ কাজী মোতাহার হোসেন তাঁর শ্বশুর। 

বেতার-চলচ্চিত্র ও টেলিভিশনের একজন জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী ছিলেন ফরিদা ইয়াসমিন। আধুনিক বাংলা, উর্দু গান ও গজলে ছিল তাঁর সমান পারদর্শীতা। 
সবধরণের সঙ্গীতের উপর ছিল তাঁর অগাধ দখল। তিনি তাঁর সুরেলা কন্ঠমাধুর্যে সঙ্গীত বোদ্ধাদের অভিভূত করেছেন অনায়াসে। স্বনামধন্য কন্ঠশিল্পী ফরিদা ইয়াসমিন, আজও স্মরণীয় হয়ে আছেন সঙ্গীতপ্রেমীদের মাঝে ।


এ জাতীয় আরো খবর