তাঁর পুরো নাম অলিভিয়া গোমেজ।
ঢাকার চলচ্চিত্রের সত্তর দশকের একমাত্র আবেদনময়ী তারকা অভিনেত্রি অলিভিয়া দীর্ঘদিন থেকে সকলের চোখের আড়ালে রয়েছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে তিনি সম্প্রতি আলোচনায় চলে আসেন। ইউটিউব থেকে 'দি রেইন'সহ তাঁর অভিনীত বেশ কয়েকটি গান এবং বিভিন্ন ভিডিও ক্লিপিং মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
তা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে ওঠে এসেছে দর্শক-শ্রোতাদের অন্তরে লালিত বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া। একজন শ্রোতা লিখেছেন -
তিনি সুচিত্রা সেনের মতোই সকলের চোখের আড়ালে চলে গেছেন ভালো করেছেন। তাঁকে আমরা চলচ্চিত্রে যেমন দেখেছি তেমন ইমেজ নিয়েই আমাদের মাঝে বেঁচে থাকুন।
অলিভিয়া অভিনীত সর্বশেষ ছবি 'দুশমনি' মুক্তি পায় ১৯৯৫ সালে। এরপর থেকে এই অভিনেত্রি পর্দা কিংবা বাস্তবে আর কারও মুখোমুখি হননি। অনেকটা নীরবে-নিভৃতেই কাটছে তাঁর জীবন।
জানা গেছে, ধর্ম-কর্ম পালন ও সংসারধর্ম নিয়েই পরম সুখে কাটছে তাঁর জীবন।
অলিভিয়ার জন্ম ১৯৫৩ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি করাচিতে। পড়াশোনা করেছেন ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে।
মাত্র ১৪ বছর বয়সে মডেলিং শুরু করেন। রিসিপশনিস্ট পদে চাকরি করেছেন কিছুদিন হোটেল পূর্বাণীতে।
এরপর কাজ করেন 'দৈনিক অবজারভার' পত্রিকায়। চাকরিরত অবস্থায় কয়েকটি বিজ্ঞাপনে কাজ করেন। হয়েছিলেন লাক্স সাবানের বিজ্ঞাপনের মডেল।
১৯৭২ সালে চিত্রনির্মাতা এস এম শফি তাঁর ‘ছন্দ হারিয়ে গেলো’ ছবিতে প্রথম ব্রেক দেন অলিভিয়াকে।
যদিও এর আগে প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার জহির রায়হানের ‘লেট দেয়ার বি লাইট’ এবং বেবি ইসলামের ‘সঙ্গীতা’ চলচ্চিত্রে অভিনয় করার কথা ছিল তাঁর।
'ছন্দ হারিয়ে গেল' থেকে 'দুশমনি' পর্যন্ত তিনি ৫০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। পোশাকি, ফ্যান্টাসি এবং সামাজিক সব ধরনের চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন এবং গ্ল্যামার নায়িকা হিসেবেই বেশি প্রতিষ্ঠা পান তিনি। নায়ক ওয়াসিমের সঙ্গে তাঁর জুটি আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পায়।
১৯৭৬ সালে মুক্তি পাওয়া এই জুটির ‘দি রেইন’ ছবিটি দেশেবিদেশে ব্যাপক সাড়া জাগায়।
প্রথম স্বামী চিত্রপরিচালক এস এম শফির মৃত্যুর পর চলচ্চিত্র ত্যাগ করেন অলিভিয়া। এরপর বিয়ে করেন ফতুল্লার মুনলাইট টেক্সটাইল মিলের কর্ণধার হাসানকে। বসবাস করছেন বনানীর ডিওএসএইচ এর বাড়িতে। এস এম শফির সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল ১৯৭২ সালে।
অভিনীত উল্লেখযোগ্য ছবিগুলো হলো - ছন্দ হারিয়ে গেল, জীবন সঙ্গীত, দূর থেকে কাছে, টাকার খেলা, মাসুদ রানা, দি রেইন, বাহাদুর, বহ্নিশিখা, তীর ভাঙ্গা ঢেউ, শাপমুক্তি, আদালত, যাদুর বাঁশি, আগুনের আলো, পাগলা রাজা, শীষনাগ, কুয়াশা, শ্রীমতি ৪২০, একালের নায়ক, বেদ্বীন প্রভৃতি।
ববিতার পর অলিভিয়াই ছিলেন একমাত্র নায়িকা যিনি কলকাতার ছবিতে অভিনয় করার সৌভাগ্য অর্জন করেন। ছবির নাম ‘বহ্নিশিখা’। ছবিতে তাঁর নায়ক ছিলেন রঞ্জিত মল্লিক, সাথে ছিলেন উত্তম কুমার।
ফেসবুক পরিবারের পক্ষে তাঁর জন্য রইল শুভ কামনা আজকের এই বিশেষ দিনটিতে।
ছবিঃ চলচ্চিত্র গবেষক
মীর শামসুল আলম বাবু