রবিবার, মার্চ ১৬, ২০২৫

পল্লবীতে মাকে পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে কিশোরীর আত্মহত্যা,এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

  • বিজ্ঞপ্তি
  • ২০২৩-০৭-২৫ ১১:৩৮:১৮

রাজধানীর পল্লবী থানাধীন আদর্শ নগর এলাকার একটি বাড়িতে মাকে বিবস্ত্র করে পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে মেয়ের আত্মহত্যার অভিযোগ উঠেছে। নিহত কিশোরীর নাম বৈশাখী (১৫)। তার মায়ের নাম লাভলী। পল্লবী থানা পুলিশের সামনেই ওই কিশোরী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে জানান এলাকাবাসী। পরে পুলিশ সদস্যদের আটকে রেখে গভীর রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন এলাকাবাসী। গতকাল সোমবার রাত আটটার দিকে কালশি আদর্শ নগর ১১ নম্বর রোডের ২১ নম্বর বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।  
এলাকাবাসীর দাবি, ২১ নম্বর চারতলা বাড়িটির মালিক লাভলী। তার বিরুদ্ধে দুটো মাদকের মামলা আছে। মাঝে মধ্যেই পল্লবী থানা পুলিশ ওই বাড়িতে গিয়ে তল্লাশি চালিয়ে টাকা দাবি করে। গত রোববারও এক লাখ টাকা নিয়ে গেছে পুলিশ।
সোমবার (গতকাল) লাভলীর বাসায় পুলিশ গিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। কিন্তু টাকা না দেয়ায় তাকে নির্যাতন করে। এর প্রতিবাদে বৈশাখী আত্মহত্যা করেছে। 
বৈশাখীর মামা সুজন গণমাধ্যমকে বলেন, বিকেল ৫টার দিকে আমার বোন লাভলীর বাসায় গিয়ে তার কাছে কোনো মাদক না পেলেও ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর ভয় দেখায় পুলিশ। মোটা অংকের টাকা দাবি করে। লাভলী ৫০ হাজার টাকা দিলেও তাকে উলঙ্গ করে নির্যাতন করে পল্লবী থানার এসআই জহির, ওহিদ, আনোয়ারসহ পুলিশের স্থানীয় সোর্সরা। এ দৃশ্য দেখে আমার ভাগনী কষ্টে পুলিশের সামনেই আত্মহত্যা করেছে।
পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপ কমিশনার জসীমউদ্দীন মোল্লা মধ্যরাতে পল্লবী থানায় সাংবাদিকদের বলেন, পল্লবী থানার একটি দল লাভলীকে ধরতে যায়। এরপর তাকে ছাড়িয়ে রাখার জন্য তার মেয়ে ও পরিবারের লোকজন টানাহেঁচড়া করে। একটা পর্যায়ে লাভলীকে নিয়ে পুলিশ নিচে নেমে আসে। এই সময়ে তার মেয়ে দরজা আটকিয়ে আত্মহত্যা করে।পরে পাবলিকে দরজা ভেঙে তাকে বের করেছে। 
পুরো ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হবে বলে জানান হয়।
বৈশাখীকে আত্মহত্যার বিষয়ে পুলিশের পল্লবী জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) নাজমুল হাসান ফিরোজ বলেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরাও শুনেছি যে মেয়েটি আত্মহত্যা করেছে এবং সেখানে এসআই জহিরের দায় আছে। জহিরকে কিন্তু নিচে আটকে রাখা হয়। 
আমরা গিয়ে দেখলাম, একটি রুমেই বৈশাখী আত্মহত্যা করেছে। পাবলিক ওই গেট ভেঙে বৈশাখীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। 
তিনি বলেন, মেয়েটির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর পাঁচ-ছয় হাজার মানুষ বেরিয়ে এসে পুলিশকে কর্ডন করে ফেলে। তারা পুলিশের উপর ইট ছুড়েছে। আমাদের লোক আহতও হয়েছে। পরে আমরা তাদের বুঝিয়ে শান্ত করি। 
থানায় জানিয়েই এসআই জহির এই অভিযানে গিয়েছিলেন বলে জানান এডিসি নাজমুল।বিষয়টির তদন্ত হবে। কেউ যদি অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হয়, অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কর্তব্য পালনে কোনো ত্রুটি থাকলেও অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
লাভলীকে বিবস্ত্র অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগের রয়েছে এলাকাতে। 


 


এ জাতীয় আরো খবর