শুক্রবার, অক্টোবর ১০, ২০২৫

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ১৯ কর্মকর্তা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য চেয়েছে দুদক

  • সকালের আলো প্রতিবেদক
  • ২০২৫-১০-০৫ ১০:৩৯:৪৬

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় দায় ও অবহেলার অভিযোগে বর্তমান ও সাবেক ১৯ কর্মকর্তার বিস্তারিত তথ্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বরাবর পাঠানো এক চিঠিতে এই তথ্য চাওয়া হয়েছে।
দুদক চিঠিতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, দায়িত্বের পরিধি, কর্মস্থল ও অন্যান্য তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। তালিকায় রয়েছেন তিন সাবেক গভর্নর, কয়েকজন সাবেক ডেপুটি গভর্নর, নির্বাহী পরিচালক, আইসিটি বিভাগের কর্মকর্তা এবং ভারতীয় দুই নাগরিক।
দুদকের সূত্র জানায়, এই কর্মকর্তাদের অনেকে রিজার্ভ চুরির সময় দায়িত্বে ছিলেন এবং অবহেলা ও নীতি শিথিলতার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
তালিকায় রয়েছেন সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, ফজলে কবির এবং আব্দুর রউফ তালুকদার। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঘটে যাওয়া রিজার্ভ চুরির সময় গভর্নরের দায়িত্বে ছিলেন আতিউর রহমান। ঘটনার পর একই বছরের ১৫ মার্চ তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন।
এছাড়া সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, আবু হেনা মো. রাজী হাসান, এস এম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফরাহ মো. নাছের, আহমেদ জামাল ও মো. মাসুদ বিশ্বাস'র বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। সাবেক নির্বাহী পরিচালক শুভঙ্কর সাহাও রয়েছেন এই তালিকায়।
বর্তমান কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন রাজশাহী অফিসের নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক এবং আইসিটি বিভাগের দেবদুলাল রায়। এর মধ্যে মেজবাউল হক গত ১৪ সেপ্টেম্বর এক মাসের নোটিশে পদত্যাগ করেন। এছাড়া চিঠিতে উল্লেখ আছে তফাজ্জল হোসেন, মাসুম বিল্লাহ, মসিউজ্জামান খান ও রাহাত উদ্দিন'র নামও।
দুদকের চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে ভারতীয় নাগরিক নীলা ভান্নান ও রাকেশ আস্তানার নাম। রিজার্ভ চুরির আগে নীলা ভান্নান ‘সুইফট’ সংযোগ স্থাপনের কাজে যুক্ত ছিলেন এবং চুরির পর রিজার্ভ সুরক্ষা নিয়ে তদন্তে অংশ নেন রাকেশ আস্তানা।
২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে দুই কোটি ডলার শ্রীলঙ্কা থেকে ফেরত আসে, এবং ফিলিপাইন থেকে প্রায় দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করা সম্ভব হয়। বাকি ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার উদ্ধারে এখনও মামলা চলছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেক্স রিজার্ভ অ্যান্ড ট্রেজারি ম্যানেজমেন্ট, আইটি, পেমেন্ট সিস্টেম ও অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগ সরাসরি এই রিজার্ভ রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল।
দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এদের প্রত্যেকের ভূমিকা ও দায়িত্ব বিশ্লেষণ করে রিজার্ভ চুরির ঘটনায় কারও গাফিলতি বা অবৈধ সুবিধা গ্রহণের প্রমাণ মেলে কি না, তা যাচাই করা হবে।

সূত্র: বাংলাদেশ ব্যাংক, দুদক, গণমাধ্যম প্রতিবেদন

বাংলাদেশ ব্যাংক, রিজার্ভ চুরি, দুদক তদন্ত, গভর্নর আতিউর রহমান, ব্যাংক কর্মকর্তাদের তথ্য


এ জাতীয় আরো খবর