আকাশে পঞ্চদশী চাঁদ ছিল, নদীর কলতান ছিল, পাতার মর্মর ধ্বনি ছিল, কোকিলের কণ্ঠে গান ছিল, তোমার হৃদয়ে ভালোবাসা ছিল।
সুরঞ্জনা- তোমাকে বলছি। মনে পড়ে সে রাতের কথা ? যেদিন প্রথম তুমি আমায় ভালোবাসা শেখালে ! সেই পঞ্চদশী রাতে যখন ধরণীর বুকে ঝরে পড়ছিল মোহনীয় চাঁদের স্নিগ্ধ- আলোকিত ভালোবাসা আর তুমি আমার দু'হাত তোমার বুকের মাঝে টেনে নিয়ে বলেছিলে ‘সাগর’, আমি তোমাকে, 'শুধুই তোমাকে ভালোবাসি'। ভালোবাসি।ভালোবাসি। আমার মনে কেমন যেন 'শিহরণ' জেগে উঠেছিলো। এর আগে এভাবে কেউ আমাকে 'ভালোবাসা'র কথা শোনায় নি। সেদিন জ্যোস্নাস্নাত রাতে তোমার মুখের পাণে তাকিয়ে দেখেছিলাম পবিত্রতা।
তারপর কত ‘দিনের পর দিন’ ‘রাতের পর রাত’ তোমার ভালোবাসায় আমি 'অবগাহন' করেছি । আমার পৌরুষকে ভালোবাসার মধুরেণুতে সিক্ত করে তুমি জাগিয়ে তুলেছিলে সুরঞ্জনা, মনে পড়ে সেসব কথা? তোমার ‘সুখের পরশ’এ আমিও কল্পনায় সাজিয়েছিলাম ‘সুখের সংসার’ সাধের ‘তাজমহল’।
অথচ সুরঞ্জনা, সেই তুমি কেন জানিনা আমাদের ভালোবাসার সাথে 'বেঈমান'ই করে ‘অমর প্রেম’ এর ‘সমাধি’ রচনা করে অন্য এক যুবকের হাত ধরে ‘শহর থেকে দূরে’ কোন এক ‘গাঁয়ের বধূ ‘ হয়ে পাতলে সুখের ‘ফুলশয্যা’, বলতে পার, কি আমার ‘অপরাধ’ ছিল আর ‘কার পাপে’ আমার নিয়তিতে নেমে এল এমন ‘কুহেলিকা’?
আজ আকাশে চাঁদ আছে, নদীর কলতান আছে, পাতার মর্মর শব্দ আছে, কোকিলের কন্ঠে গান আছে। তোমার হৃদয়ে ভালোবাসা আছে। নিত্য নতুন ভালোবাসার বীজ বুনে চলেছ অন্যের বুকে। আর আমি!
আমার সামনে ভালোবাসা শুধুই বিবর্ণ- ধূসর হয়ে যায় ।।