কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক আবারও টান টান উত্তেজনায়। দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক তিক্ততা যখন চরমে, ঠিক সেই সময়ে খেলাধুলার ময়দানে মুখোমুখি হয় ভারত ও পাকিস্তান—আর সেখানেই জয় ছিনিয়ে নিল ভারত।
ব্যাংককে অনুষ্ঠিত মহিলাদের বেসবল এশিয়া কাপের বাছাইপর্বে এক রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে পাকিস্তানকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছে ভারতীয় নারী দল। নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে শেষ হলেও টাইব্রেকারে হরবিন্দর কৌর ও মনবীর কৌরের নৈপুণ্যে জয় আসে ভারতের ঝুলিতে।
এমন সময় এই জয় এল যখন কাশ্মীর ইস্যুকে ঘিরে দুই প্রতিবেশীর কূটনৈতিক উত্তাপ সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। পেহেলগামের ভয়াবহ হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারতীয় জনগণ ও প্রশাসনের ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে সবখানে।
খেলার মাঠে টানটান উত্তেজনা
খেলার শুরু থেকেই দুদল ছিল রক্ষণাত্মক ও কৌশলগত। পাকিস্তান একসময় এগিয়ে গেলেও ভারত দৃঢ়তায় ম্যাচে ফিরে আসে। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ সমতায় শেষ হলে টাইব্রেকারে এগিয়ে যায় ভারত।
এটি কেবল একটি ক্রীড়া জয় নয়-ভারতের পক্ষ থেকে এটি এক প্রকার মনস্তাত্ত্বিক জবাবও, এমনটাই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
বিসিসিআই-এর কড়া বার্তা
এদিকে শুধু খেলোয়াড়ি জয়েই থেমে থাকেনি ভারত। দেশের ক্রীড়ানীতিতেও দৃঢ় অবস্থান নিচ্ছে তারা। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (BCCI) আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলকে (ICC) চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানিয়েছে, ভবিষ্যতে কোনো প্রতিযোগিতায় যেন ভারত ও পাকিস্তানকে একই গ্রুপে না রাখা হয়।
পাশাপাশি, ভারতে পাকিস্তান সুপার লিগ (PSL)-এর সম্প্রচারও স্থগিত করা হয়েছে। বিসিসিআইয়ের অবস্থান—বর্তমান পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের সঙ্গে কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজে অংশ নেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
কূটনীতি বনাম ক্রীড়া: উত্তপ্ত সমীকরণ
ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরেই স্পর্শকাতর। মাঝে মাঝে ক্রিকেট কিংবা অন্যান্য খেলায় কিছুটা উষ্ণতা ফিরলেও রাজনৈতিক সংকট বারবার সেই সম্পর্ককে প্রতিহত করেছে। এবার সেই উত্তেজনার পটভূমিতে ভারতীয় নারীদের বেসবল জয় যেন একটি ভিন্ন মাত্রা যোগ করল।
প্রেক্ষাপট:
ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক ক্রীড়াসূচি বহু বছর ধরেই স্থগিত। শুধু আইসিসি বা এসিসি টুর্নামেন্টেই মুখোমুখি হয় দুই দল। রাজনৈতিক উত্তাপ যখন চরমে, তখন খেলাধুলাও হয়ে ওঠে জাতীয় মর্যাদার প্রতীক।