যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির নতুন মেয়র হয়েছেন তরুণ মুসলিম নেতা জোহরান মামদানি। অভাবনীয় জনপ্রিয়তা ও তরুণদের বিপুল সমর্থনে ইতিহাস গড়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। মাত্র এক বছর আগেও রাজনৈতিক অঙ্গনে তাঁর উপস্থিতি ছিল খুব সীমিত-না ছিল বড় কোনো দলীয় তহবিল, না ছিল বিশাল প্রভাবশালী লবি। কিন্তু সমাজে ন্যায্যতা, মানবিকতা ও প্রগতিশীল পরিবর্তনের অঙ্গীকার তাঁকে নিয়ে গেছে সাফল্যের শীর্ষে।
মামদানি নিজেকে গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী হিসেবে পরিচয় দেন। শিশুদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা, গণপরিবহন ব্যবস্থার সম্প্রসারণ ও ন্যায়সংগত অর্থনৈতিক নীতি-এসবই ছিল তাঁর নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির মূল কেন্দ্রবিন্দু। এসব কারণে তরুণ ভোটারদের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদের মধ্যেও দ্রুত জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি।
তবে মেয়র হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর তাঁর সামনে থাকছে একাধিক চ্যালেঞ্জ। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ১২ বছর আগে ডেমোক্র্যাট বিল ডি ব্লাসিওর মতো তিনিও নানা কাঠামোগত সীমাবদ্ধতার মুখে পড়তে পারেন। নিউইয়র্কের রাজনীতি ও প্রশাসনিক কাঠামোতে যেভাবে প্রভাব বিস্তার করে আছে কর্পোরেট ও অভিজাত শ্রেণি, তা মামদানির সমাজতান্ত্রিক আদর্শ বাস্তবায়নে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
তাঁর আরেকটি পরীক্ষার জায়গা হবে আন্তর্জাতিক অবস্থান। নির্বাচনী প্রচারণায় গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের বিরোধিতা এবং নেতানিয়াহুকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ ঘোষণা করার দাবি তাঁকে যেমন প্রগতিশীল মহলে জনপ্রিয় করেছে, তেমনি রক্ষণশীলদের বিরাগও ডেকে এনেছে। এখন মেয়র হিসেবে এই অবস্থান কতটা ধরে রাখতে পারেন, সেটিই বড় প্রশ্ন।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইতোমধ্যেই মামদানির বিরোধিতায় নেমেছেন। ট্রাম্পের হুমকি-নিউইয়র্কে কেন্দ্রীয় তহবিল বন্ধ করে দেওয়া হবে, যদি মামদানি ‘চরমপন্থী নীতি’ অনুসরণ করেন। তবে মামদানি বলেছেন, “আমি জনগণের মেয়র, ভয় নয়, ন্যায়ই হবে আমার পথ।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, ট্রাম্পের চাপ, কর্পোরেট প্রভাব এবং প্রশাসনিক জটিলতা সত্ত্বেও জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের তরুণ প্রজন্মের কাছে নতুন আশার প্রতীক হয়ে উঠেছেন। এখন তাঁর দায়িত্ব-সেই আস্থা বাস্তব রূপ দেওয়া।
কীওয়ার্ডস:
জোহরান মামদানি, নিউইয়র্ক মেয়র, যুক্তরাষ্ট্র রাজনীতি