ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে, গত ১৪ বছরে দেশের জলবায়ু অর্থায়নের জাতীয় তহবিলের অর্ধেকেরও বেশি অংশ দুর্নীতিতে নষ্ট হয়েছে। সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড (বিসিসিটিএফ) থেকে অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর ৫৪ শতাংশ অর্থ দুর্নীতির শিকার হয়েছে। এই পরিমাণ প্রায় ২৪৮ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার বা ২ হাজার ১১০ কোটি টাকার বেশি।
মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডিতে মাইডাস সেন্টারে আয়োজিত “বাংলাদেশে জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়” শীর্ষক অনুষ্ঠানে টিআইবি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১০ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিসিসিটিএফ থেকে মোট ৪৫৮ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ অনুমোদিত হয়। এর মধ্যে রাজনৈতিক প্রভাব, যোগসাজশ ও স্বজনপ্রীতির কারণে প্রকল্প অনুমোদনে অনিয়ম ঘটেছে। তহবিল ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত কর্মকর্তারাও কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন।
টিআইবি আরও জানায়, জলবায়ু অভিঘাত মোকাবেলায় প্রতিবছর বাংলাদেশের প্রয়োজন ১২ হাজার ৫০০ মিলিয়ন ডলার। কিন্তু ২০১৫ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গড়ে বছরে বরাদ্দ এসেছে মাত্র ৮৬ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার, যা প্রয়োজনের শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৮৯১টি জাতীয় প্রকল্পের মধ্যে ৫৪৯টির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে-গড়ে ৬৪৮ দিনের প্রকল্প শেষ হতে সময় লেগেছে প্রায় ১ হাজার ৫১৫ দিন। কিছু চার বছর মেয়াদি প্রকল্প শেষ হতে লেগেছে ১৪ বছর পর্যন্ত।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “জলবায়ু অর্থায়নে জবাবদিহিতা, দক্ষতা ও সুশাসনের অভাব প্রকৃত উপকারভোগীদের বঞ্চিত করছে। জাতীয় তহবিলের অর্ধেকের বেশি অর্থ রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালীরা আত্মসাৎ করেছে, যা জলবায়ু অভিযোজনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।”

কীওয়ার্ডস: টিআইবি প্রতিবেদন, জলবায়ু তহবিল দুর্নীতি, বিসিসিটিএফ