প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, যুবসমাজকে অন্তর্ভুক্ত না করলে টেকসই বৈশ্বিক উন্নয়ন কোনোভাবেই সম্ভব নয়। বেকারত্ব এখনো টেকসই অগ্রগতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, আর প্রযুক্তি উদ্ভাবনের সুযোগ কাজে লাগাতে হলে এর সুফল যেন কিছু মানুষের লোভের বেড়াজালে আটকে না থাকে।
বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের সাইডলাইনে ‘যুবদের জন্য বিশ্ব কর্মসূচি’র ৩০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এসব কথা বলেন তিনি।
৮৫ বছর বয়সী অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “অন্তঃপ্রজন্মীয় সহযোগিতার মাধ্যমে বৈশ্বিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার বিষয়টি আজ আরও গভীরভাবে অনুভব করছি। গত বছর বাংলাদেশের যুবশক্তি প্রমাণ করেছে তারা পরিবর্তনের প্রকৃত চালিকাশক্তি। সাহসের সঙ্গে তারা দীর্ঘ স্বৈরশাসনের অবসান ঘটিয়েছে, জাতির পথ নতুনভাবে নির্ধারণ করেছে এবং আমাকে গণতান্ত্রিক রূপান্তরের দায়িত্ব দিয়েছে।”
তিনি উল্লেখ করেন, যুবরা বৈষম্য, সংঘাত, জলবায়ু পরিবর্তন ও ডিজিটাল বিভাজনের সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী। নিম্ন আয়ের দেশে যুব বেকারত্ব প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় চারগুণ বেশি বলেও তিনি সতর্ক করেন।
বাংলাদেশে গৃহীত উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমরা জাতীয় যুব উদ্যোক্তা নীতি চালু করেছি, যা অর্থ, দক্ষতা ও বাজারে প্রবেশ নিশ্চিত করছে। ফলে যুবরা চাকরি প্রার্থী নয়, বরং চাকরি সৃষ্টিকারীতে পরিণত হবে।”
এছাড়া সংস্কার কমিশনে যুবদের অংশগ্রহণ, জাতীয় নীতি প্রতিযোগিতা ও গণতান্ত্রিক নবায়নে তাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “যুবদের ক্ষমতায়নে কোনো দেশ একা সফল হতে পারে না। বৈশ্বিক সহযোগিতার মাধ্যমেই ন্যায়বিচার, অন্তঃপ্রজন্মীয় নেতৃত্ব ও ভবিষ্যতের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা সম্ভব। নইলে হতাশা সহজেই অশান্তিতে রূপ নিতে পারে।”
শেষে তিনি যোগ করেন, “যুবদের অধিকার, নিরাপদ স্থান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, তারা সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে—নিজেদের জন্য, পৃথিবীর জন্য এবং আমাদের সবার ভবিষ্যতের জন্য।”
কীওয়ার্ডস:যুব অন্তর্ভুক্তি,বেকারত্ব সংকট,মুহাম্মদ ইউনূস,টেকসই উন্নয়ন,জাতিসংঘ বৈঠক