চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি:
বন্দর ট্যারিফ সংক্রান্ত জটিলতায় দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার সোনামসজিদ স্থলবন্দরে ভারত থেকে পণ্য আমদানী বন্ধ হয়ে গেছে। বন্দর সংশ্লিস্ট একাধিক সূত্র জানায়, রবিবার(১৫ সেপ্টেম্বর) বন্দরে কোন ভারতীয় আমদানী পণ্যবাহী ট্রাক প্রবেশ করে নি। ভারতে রপ্তানীও হয় নি কোন পণ্যবাহী বাংলাদেশী ট্রাক। এ অবস্থা অব্যহত থাকলে রাজস্ব আদায়ে বড় ক্ষতি হওয়াসহ দেশের ভোগ্যপণ্য,কাঁচামাল,শিল্পপণ্য, উৎপাদন,নির্মাণ ও উন্নয়ন সেক্টরসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বড় প্রভাব পড়বে।
বন্দর সূত্রগুলো জানায়, সকল পণ্য আমদানী-রপ্তানী বন্ধ থাকলেও সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে মূলত: পাথর আমদানী নিয়ে। বন্দর পরিচালনাকারী বেসরকারী অপারটের প্রতিষ্ঠান পানামা সোনামসজিদ পোর্ট লিংক লিমিটেড সরকারি নিয়মানুযায়ী সকল গাড়ির ক্ষেত্রে পোর্ট ট্যারিফ বা বন্দর শুল্ক আদায় করে সরকারি কোষাগারে চালানের মাধ্যমে জমা করে। পোর্ট ট্যারিফের অন্তর্ভূক্ত রয়েছে লেবার হ্যান্ডলিং সহ বিভিন্ন চার্জ। নিয়মানুযায়ী সকল গাড়ি বন্দর ইয়ার্ডে প্রবেশ করবে,সেখানেই লেবার হ্যান্ডলিং এর মাধ্যমে লোড-আনলোড হবে। কোন আমদানী পণ্য রাখতে হলে বন্দরের ওয়্যারহাউসেই থাকবে। কিন্তু বন্দরের ক্যাপাসিটির সীমাবদ্ধতার কারনে পাথরের ক্ষেত্রে লেবার হ্যান্ডলিং বা গাড়ী ওয়েটিং কোনটিই বন্দরের ভেতরে হয় না। কিন্তু সে বাবদ শুল্ক আদায় হয় ঠিকই। এ ক্ষেত্রেই দীর্ঘদিনের আপত্তি আমদানীকারকদের। যে সেবা তারা পোর্ট থেকে নেন না সেই শুল্ক তারা দেয়ার বিরুদ্ধে। তাদের তো বাইরে পাথর লোড-আনলোড করতে আবার লেবার চার্জ দিতে হচ্ছে। একই টাকা দু’বার দেয়ায় তাদের খরচ বাড়ছে অনেক। পাথরের দাম বাড়ছে। ব্যবসায় অসুবিধা হচ্ছে। এই বন্দরে বাইরের ব্যবসায়ীরা ব্যবসা না করে অন্য বন্দরে চলে যাচ্ছেন। ফলে তারা এ সমস্যার সুরাহার দাবিতে ভারতীয় রপ্তানীকারকদের চিঠি দিয়ে বন্দরের পুরো আমদানী-রপ্তানী বন্ধ করে দিয়েছেন।
সোনামসজিদ আমদানী রপ্তানীকারক গ্রæপ সভাপতি কাজী সাহাবুদ্দিন বলেন, আমদানীকারকরা বন্দর শুল্ক দিতে চান। কিন্তু পাথর বাবাদ লেবার চার্জ দিতে চান না। কারন এই সেবা তারা নেন না। ২০০৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত ট্যারিফ আদায় তৎকালীন বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের মধ্যস্থতায় বিষয়টির মৌখিক একটি সমঝোতার ভিত্তিতে চালু ছিল। কিন্তু ২০১৯ সাল থেকে আবারও পাথরের লেবার চার্জ দিতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে বহু আলোচনায় ফল না হওয়ায় বন্দর বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে সংশ্লিস্ট পানামা বন্দর কর্তৃপক্ষ,জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, কাষ্টমস,বিজিবি,সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশন,লেবার সমিতি,রপ্তানীকারক সহ সকল পক্ষের সাথে আলোচনা চলছে। যত দ্রæত সম্ভব বন্দর চালু হবে।
পনামা বন্দর কর্তৃপক্ষের জিএম বেলাল হোসেন বলেন,বন্দর সরকারি প্রতিষ্ঠান। তারা বন্দর উন্নয়ন, নিয়মানুযাায়ী ট্যারিফ আদায় করে সরকারকে দেয়া সহ বন্দরের সকল কাজ করেন। সমস্যাটি পুরাতন। এখন আবার নতুন করে শুরু হয়েছে। তবে সংশ্লিস্ট সকল পক্ষের সাথে আলোচনা চলছে। বন্দর দ্রæত চালুর চেষ্টা করা হচ্ছে। সমস্যা সমাধানে বন্দর কর্র্তৃপক্ষের যেটুকু করার ক্ষমতা তা করা হয়েছে। সব ব্যাপার উর্ধতণ মহলকে জানানো হয়েছে ও তারা তৎপর হয়েছেন। জানা গেছে গত শনিবার(১৪ সেপ্টেম্বর) বন্দরে শেষ ৪১১ ট্রাক ভারতীয় পণ্য আমদানী হয় যার ২৮৯টি ছিল পাথরের ট্রাক।