শুক্রবার, ফেব্রুয়ারী ১৪, ২০২৫

মা ই নু ল এ ই চ সি রা জী

  • জীবনযুদ্ধে আমরা একেকজন কি বোম্বাই-হাজি?
  • ২০২৪-০১-১৯ ২০:৩২:৩৫

এককালে হজে যেতে হতো জাহাজে। এই যাত্রায় কয়েক মাস লেগে যেত। বাংলাদেশ থেকে যাঁরা যেতেন, তাঁরা দলবদ্ধভাবে আগে যেতেন বোম্বাই (বর্তমানে মুম্বাই)। সেখান থেকে উঠতেন জাহাজে। দলের কেউ কেউ স্বাস্থ্যগত বা আর্থিক কারণে মক্কার জাহাজে উঠতে পারতেন না। বোম্বাইতে অপেক্ষা করতেন। হজ শেষে ফিরতি হজযাত্রীদের সঙ্গে দেশে ফিরতেন।
এলাকায় এঁরা বোম্বাই-হাজি হিসেবে পরিচিতি ও সম্মান পেতেন।
আল্লাহর কাছে নিয়ত ও উদ্দেশ্যই ধর্তব্য। আল্লাহ অতি দয়ালু।
কিন্তু জাগতিক জীবন বড়ই নিষ্ঠুর। পদে পদে বহু চেষ্টা-সাধনা করে আমাকে-আপনাকে বোম্বাই পর্যন্ত গিয়ে ফিরে আসতে হয়, মক্কা গমনের সাফল্য আর কবুল হয় না।
পঁচিশের তরুণ চাকরির বাজারে দৌড়াতে দৌড়াতে বোম্বাই গিয়ে জাহাজ ফেল করে, তিরিশের যুবক আরেকটু আর্থিক সংগতি চায়; স্বপ্নবাজ তরুণ/তরুণী কারও হাত ধরে গাইতে থাকে—এই পথ যদি না শেষ হয়..., কিন্তু মাঝপথে বোম্বাই বন্দরে তাদের পথ শেষ হয়ে যায়।
সংসারী মানুষেরা স্বপ্ন দেখে, নতুন বছরে নিশ্চয়ই শান্তি আসবে, বউটা/স্বামীটা আরেকটু সংসারী হবে, জিনিসপত্রের দাম কমবে; সহায়-সম্বল নিয়ে তারা জীবনের হাটে যায় সুখ কিনতে। না, পারে না; নিজেদের আবিষ্কার করে জাহাজ ছেড়ে দেওয়া বোম্বাই ঘাটে।
আমি-আপনি রসুন বুনে জীবনভর সবুর করি, কিন্তু মক্কার সাফল্য আর আসে না।
তবু আমরা সবুর করে বসে থাকি বোম্বাইতে, সফল হাজিরা ফিরলে তাঁদের সঙ্গে দেশে ফিরব বলে। 
কী অসাধারণ আমাদের ধৈর্য! আমাদের মানিয়ে চলার এই অদ্ভুত ক্ষমতাকে স্যালুট না করে উপায় কী!

 


এ জাতীয় আরো খবর