মনে পড়ে গেল-
সে অনেক আগের কথা,
ঢের আগেকার।
কোন বৈশাখমাসে- ঝড়ের রাতের
সে ছিল ঘুমিয়ে
নিঃসাড় পুরীতে এক পাহাড়ি গ্রামে
সেখানে আর কেউ নেই।
আমি দেখছি তারে,নিবিড়ভাবে
এক ঘরে পালন্কের "পরে শুধু একখানা দেহ"
পড়ে আছে-
পৃথিবীর কেণে কোণে রূপ শুধু খোঁজে
তারে আমি দেখেছি
সেও যে ছিল চোখ বুজে
মসৃন কাগজের মতো সাদা হাত দূটি
বুকের উপরে ছিল লুটোপুটি।
সাদা পাথরের মতো গা যেন তার
এর যেন কোনদিন না ছিল হৃদয় -
কিংবা ছিল,তা আমার জানা নেই আজও
তাই আমি তারে পারিনী জাগাতে,
শতবার ডেকে ডেকে।
শুধু পাষাণের হাতে হাত লেগে আছে,
হয়তো উঠবে সে জেগে
তুমি যদি ধরো গিয়ে হাত দুটি তার!-
ফুরালো সে কথা, শুনিলে সে যে
তার পরে বললো রাজার কুমার,
আমিও দেখেছি তারে -
সেগুন বাগিচার ধারে ঝরনার পাড়ে
জোছনার গায়ে ঢুলেছিল সেদিন।
মনে পড়ে, শোন মনে পড়ে,
পূর্ণিমারচাঁদ সরে গেছে নদীর শিয়রে-
সব নদী মিটিয়েছে তাদের দেনা।
সেই নদী,ঝর্ণা আজ আর নেই
আমি তবু তার তীরে আজও তো দাঁড়াই।
নিবু নিবু জোছনার আলো
পথ চিনে চিনে, যেদিক সে গেছে চলে
দাঁড়িয়েছিলাম গিয়ে পৌষে কিংবা ফাল্গুনে।
সে দেশ ছেড়ে শীত যায় চলে
আশ্বিনের চাঁদ ক্রমেই যায় ঢলে।
নদীর কিনারে যেন!-
ঐরাবতের গড়া মুর্তির মতন
শুয়ে আছে- শুয়ে আছে- সাদা হাতে
ধবল বক্ষখানি,
রেখেছে সে ঢেকে।
বাকিটুকু আজ বাকি থাক,
শুধু একজনই রইলো তার সাক্ষী!
এই তার ছবি!
দিনের আলোয় তার সবই যায় মুছে
আজও তবু খুঁজি!
শুধু খুঁজি!
কোথায় ঘুমন্ত তুমি চোখ আছো বুজি!
২৩৪২৩
রীতা রায়
শিক্ষক, কবি ও লেখক