সন্দীপ রায় একজন বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক। তিনি বিশ্ববিখ্যাত চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের একমাত্র পুত্র।
তার জন্ম ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৫৩ সালে কলকাতায়। তাদের পূর্বপুরুষের আদি নিবাস বৃহত্তর ময়মনসিংহের কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদি উপজেলার মসুয়া গ্রামে।
সন্দীপ রায় ২২ বছর বয়সে তার চলচ্চিত্র জীবন শুরু করেন 'শতরঞ্জ কি খিলাড়ী' ছবিতে পিতার সহকারি পরিচালক হিসেবে।
সত্যজিৎ রায়ের 'ফেলুদা' গোয়েন্দা উপন্যাস সিরিজের কাহিনী অবলম্বনে তিনি কয়েকটি সিনেমা তৈরি করেছেন।
এছাড়াও তিনি তার পিতার বিভিন্ন ছবিতে ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করেন। তার পরিচালনায় প্রথম কাজ 'ফটিকচাঁদ' ছবিতে।
ছবিটি আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কার পায়। সত্যজিৎ রায়ের শেষ ৩টি চলচ্চিত্র শাখা-প্রশাখা, গনশত্রু, আগন্তুকেও তিনি ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করেন।
তিনি তাদের চার পুরুষের ছোটদের ম্যাগাজিন 'সন্দেশ' এর প্রকাশক হিসেবে কাজ করছেন। এই ম্যাগাজিন প্রকাশ শুরু হয় প্রপিতামহ উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী দ্বারা।
এরপর তার পিতামহ সুকুমার রায় ও পিতা সত্যজিৎ রায় এই ম্যাগাজিনের হাল ধরেন।
১৯৯২ সালে পিতার মৃত্যুর পর সন্দীপ রায় যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন এবং ২০০৩ সালে হতে বর্তমান পর্যন্ত তিনি এই ম্যাগাজিনের সম্পাদক।
সন্দীপ রায় বিখ্যাত গোয়েন্দা চরিত্র 'ফেলুদা'র অনেক সিনেমার কাজ করেন। তিনি 'দ্বীপ প্রকাশন' হতে প্রকাশিত 'আমি আর ফেলুদা' বইয়ের লেখক।
বইটি কলকাতা বইমেলার বেস্ট সেলার হয়। এই বইটি সত্যজিৎ রায়ের লেখা 'একেই বলে শুটিং' বইটির ভিন্ন স্বাদ বহন করে। বইটিতে তার নির্মিত ফেলুদার নির্মাণের গল্প রয়েছে।
তিনি তার নিজের লেখা কাহিনী 'হিটলিস্ট' এর উপর ভিত্তি করে ২০০৯ সালে সিনেমা নির্মাণ করেন।
তিনি 'তাড়িনীখুড়ো'র উপর সিনেমা বানানোর কাজও করেছেন। 'তাড়িনীখুড়ো' সত্যজিৎ রায়ের লেখা এক জনপ্রিয় চরিত্র।
সত্যজিৎ রায়ের শেষ তিনটে চলচ্চিত্রে তিনি অপারেটিং ক্যামেরাম্যান হিসেবে কাজ করেছেন। গনশত্রু (The Enemy of the People), শাখা-প্রশাখা (The Branches of the Tree), আগন্তুক (The Stranger)।
কীর্তিমান এই জীবন্ত মানুষটির জীবনের উপস্থিতি চলচ্চিত্র জগতকে আরো সমৃদ্ধ করুক