আজ আমার প্রয়াত বন্ধু মুশতাকের জন্মদিন। সবার কাছে ছিল ওর বর্ণাঢ্য পরিচয়, বহুজন ওকে জানতো রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাক বলে, কিন্তু আমার কাছে ও কেবলই মুশতাক, শুধুই মুশতাক।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে মুশতাকের সঙ্গে আমার পরিচয় ছিল না - ভিন্ন বিভাগ, ভিন্ন ছাত্রাবাস, ভিন্ন কলেজের ছাত্র এবং ভিন্ন বলয়েরও লোক। মুশতাকের সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় ২০১৭ সালের আগষ্টের দিকে সতীর্থ ৬৯ এর সুতো ধরে। সে পরিচয় ঘণিষ্ঠতায় রূপান্তরিত হল মাস ছ’য়েক বাদে সতীর্থ ৬৯ এর পুনর্মিলনীতে ঢাকার বাইরে। আমাদের বেশীরভাগ বন্ধুই জানতো না, সেখানেই আমি জানালাম যে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধিটি মুশতাকেরই চয়িত।
ততদিনে মুশতাক আমার লেখার মুগ্ধ পাঠকে পরিণত হয়েছে। ২০১৮ এর বইমেলায় এ এলো, আমার বই কিনে সই নিল, ছবি তুললাম আমরা এক সঙ্গে। সে বছর আমাদের চার সতীর্থ বন্ধুর বই বেরিয়েছে একুশের বইমেলায় - শামীমের (কবি শামীম আজাদ) ‘বংশবীজ’, মহিউদ্দীনের (মহিউদ্দীন আহমেদ) ‘এদেশে একদিন যুদ্ধ হয়েছিল’, নরেশের (নরেশ ভূঁইয়া) ‘দীপার সারাবেলা’এবং আমার ‘বেলা-অবেলার কথা’। মুশতাকের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল ৪ঠা মার্চ বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে এক অনন্যসাধারন প্রকাশনা উৎসব আমাদের চার বন্ধুর বইয়ের। মিলনায়তন ভর্তি ছিল আমাদের সতীর্থ বন্ধুদের দ্বারা। সেই বিকেলটি কি ভোলা যাবে?
রাত বারোটা বেজেছে লন্ডনে। হৃদয়ে জলের বুদ্বুদের মতো উঠে আসছে একটি লাইন বার বার,
‘তবু মনে রেখো
যদি দূরে যাই চলে
তবু মনে রেখো'।
শুভ জন্মদিন, মুশতাক। ওর জন্মদিনে আমি প্রস্তাব করছি যে, 'বঙ্গবন্ধু' উপাধিটির ঊদগাতা রেজাউল হক চৌধুরী মুশতাককে 'স্বাধীনতা পদক' দেয়া হোক।