কোচিং শেষে রাত করে বান্ধবী রুমি সহ বাড়ি ফিরছি।রুমি বললো " কত রাত হয়ে গেলো বল তো!আমার তো ভয় লাগছে "
" ইমন স্যারের জন্যই তো দেরী হলো।হঠাৎ প্রশ্ন দিয়ে বলে পরিক্ষা দাও "
" যা বলেছিস,ওনাকে দেখলেই গা জ্বলে যায় "
" কুয়াশাও বেশি আজ,এক হাত দূরের কিছু দেখা যাচ্ছে না।দ্রুত পা চালা।তোর বাড়িতে নিশ্চয়ই চিন্তা করছে "
" তুই আছিস জন্য চিন্তা করছে না।মা তোকে খুব বিশ্বাস করে "
" তা তো করতেই হবে।সুপারম্যান বলে কথা! "
" হয়েছে হয়েছে,তোর মতো আলুর চপ সুপারম্যান? হাহাহা "
রুমি শব্দ করে হাসলো।গলির মোড়ে কুয়াশা নেই,দেখলাম কয়েকটা ছেলে দল বেঁধে সিগারেট খাচ্ছে।রুমির হাত ধরে বললাম
" সামনে বখাটে ছেলে।কথা বলিস না,চুপচাপ চল "
রুমি ফিসফিস করে " আরেহ,তুই তো সুপারম্যান।তুই থাকতে কিসের ভয় "
ছেলেদের কাছে আসতেই একজন রুমির দিকে সিগারেটের ধোঁয়া ছাড়লো।আরেকজন হাত তুলে আমাদের রাস্তা আটকালো।রুমি ভয়ে আমার হাত শক্ত করে চেপে ধরলো।বললাম
" পথ আটকালেন কেনো? "
বাইকে বসা লোকটা কড়া স্বরে " রাতে গলির মধ্যে মেয়ের হাত ধরে হাঁটছিস,সাহস তো ভালোই।কয়টা বি* তোর "
অ"শ্লীল গালি শুনে মাথা গরম হয়ে গেলো।ওদের সাথে ঝামেলা করা ঠিক হবে না।কারণ সংখ্যায় বেশি।আরেকজন আমার ঘাড়ে হাত রেখে
" তোর সাথে কথা আছে, সামনে চল "
রুমির হাত ধরে ছেলেটার পেছন যাবো তখন আরেকজন " উহু,মেয়েকে ছাড়।আমরা আছি তো ওর খেয়াল রাখার জন্য "
" কেনো ঝামেলা করছেন! আমাদের বাসায় যেতে হবে,দেরী হচ্ছে "
বাইকে বসা ছেলেটা আচমকা আমার ঘাড়ে প্রচন্ড এল ঘু"ষি বসিয়ে দিলো৷ধপ করে সশরীরে রাস্তায় পরে গেলাম।চারপাশ অন্ধকার হয়ে গেলো।শুধু রুমির চাপা কন্ঠ কানে ভেসে এলো।আবছা আবছা দেখলাম তিন চারটা ছেলে রুমির মুখ চেপে অন্ধকারের দিক টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাচ্ছে!
প্রায় ঘন্টাখানেক পর হুঁশে ফিরলাম।দেখলাম রুমি অর্ধন"গ্ন হয়ে আমার পাশে বসে আছে।ঠোঁ"ট বেয়ে র"ক্ত শুকিয়ে আছে।চোখ মুখ ফোলা।বুঝতে বাকি রইলো না রুমিকে গণধ"র্ষণ করা হয়েছে।
এরপর থেকে রুমি পড়াশোনা ছেড়ে দিলো।সারাদিন ঘরে থাকে,কারো সাথে কথা বলেনা।মানসিক ভাবে বিধ্বস্ত।ওর এই অবস্থার জন্য সবসময় নিজেকেই দায়ী মনে হয়।সেরাতে আমি পারিনি রুমির সম্ভ্র"ম রক্ষা করতে।কিন্তু ওকে নতুন করে বাঁচতে তো শেখাতে পারি।
বাবা মাকে বললাম " রুমির এই অবস্থার জন্য আমি দায়ী।আমি পারিনি ওর সতীত্ব রক্ষা করতে।এই অন্যায়বোধ সারাজীবন আমায় বয়ে বেড়াতে হবে,সাথে রুমিকেও।আমি ঠিক করেছি রুমিকে বিয়ে করবো।ওকে নতুন করে বাঁচতে শেখাবো "
বাবা না প্রথমে রাজি না হলেও আমার জোরাজুরিতে সপ্তাহখানেক পর আমাদের বিয়ে হলো।বাসররাতে রুমির হাতে হাত রেখে বললাম " তুই আমার কাছে সর্বদা পবিত্র ছিলি,এখনো আছিস।আমার চোখে তুই ফুলের ন্যায় শুভ্র"
" করুণা করলি তাই না? "
" আমরা চাইলেই কি এটাকে ভালোবাসায় পরিণত করতে পারিনা? "
রুমির চোখে জল।