বহুদিন আগে গিয়েছিলাম -
কোন এক শুষ্কজলা পেড়িয়ে,শুষ্কপ্রায় নদীবরাবর
পিঙ্গলবর্ণ পথ দিয়ে,ঘন কুয়াশার চাদর মোড়ানো,
হিজল বনের মাঝখান দিয়ে চলে গেছে যে পথ,
হুতুম পেঁচার শুষ্কহৃদয়ের করুণ আহাজারি শুনতে শুনতে।
মাঝেমধ্যে আমার অন্তরাত্মা কেঁপে কেঁপে উঠছে
অন্তরালবর্তী শৃগালের বিকট ও কর্কশ শব্দে।
আহা! শীতের রাতের ঘন জঙ্গল এত বিভীষিকাময়!
এত ভয়ংকর কেন?
নিশুতি রাতের নিশাচরের কি শীত অনুভূতিহীন?
নাকি শীতের চাদড়ের অভাবে এই বিকট চিৎকার!
এখনো ডাহুক - ডাহুকীর ডাকে কান হলো ঝালাপালা।
অঝোরে ঝরে শীতের কান্না, মাথায় যেন বরফের পাহাড়।
হাতে- পায়ে নেই কোন সাড়,
পূর্ণিমার চাঁদে যেন অদ্ভুতুড়ে আলো,যা মনে শুধু ভয় ও শঙ্কা ছড়ায় গোলাপের পাঁপড়ির মতো।
ঝিঁঝিঁ পোকাগুলোর যেন ক্লান্তিজনিত কোন ভাব নেই।
গলায় শুধুই বেসুরো গান।
আবার গ্রীষ্মপীড়িত ঝড়,আবহাওয়া-
কখনো আমায় দুমড়ে - মুচড়ে দেয়,উড়িয়ে নিয়ে যায় খোলা প্রান্তরে দিগ্বিদিক।
শ্রাবণধারায় অশ্রান্ত ভাবে ভিজিয়ে দিয়ে যায়।
শুধু তনু নয়,তার সাথে মন ও।
অঝোর ধারায় গৃহবন্দি মন ঘুরে বেড়ায় সারাপাড়ায়।
শরতের শিউলিতে ভরে যায় উঠোন,ভরে যায়
আঁচল আর আমার হালকা তুলো মন।
সাদা ভেলায় শিউলি মালা নিয়ে চলে যাই আমি
ফুল- ফলের অঘ্রাণের নবান্নের দেশে।
হঠাৎ বসন্তদূত এসে বলে,চলো ফুলের রাজ্যে!
সেখানে শুধুই খুশি আর খুশি,গান আর গান।
কোনকিছু না ভেবে বলি,চলো তবে---
কিন্তু আমার গন্তব্যস্থান কোথায়?
আমি গন্তব্যপথহীন ভাবে গন্তুকামী এক পথিক।
সেই পথ যেন অন্তহীন, সেই থেকে -
রোদ,ঝড়,জল, সবকিছু এড়িয়ে চলছি শুধু চলছি
গন্তবহীন এক পথিক আমি।।