আজো বৃষ্টিনামেনি হেমন্ত মাঠে
শেফালী ভেজেনি শিশিরে
এখনো নদীটি নেচে উঠেনি
গোরাই মন কাড়েনি যুবতির
ধুলোরাস্তা কার্পেট পড়েনি, মন বসেনি
অন্নপূর্ণায়, আগ্রহ নেই যুবকের;
উঠোনজুড়ে সাহানার বাঁশি
ধান রাশি রাশি
মইমাতাল চাতাল ছেড়ে চোর চোর অভিসারে
কাদোলে কামনার খর ঘর ছাড়ায় কৃষকের
কৃষাণীর পাকা ধান ইঁদুরখোলায়
চুপিসারে বাজে বাঁশি রাখালের
যুবকের উড়ুক্কু মুখ যুবতির ওড়না ছেড়ে
কৃষাণীর উপরে ওড়ে
দয়ার দরকার নেই বলে কৃষকের আক্ষেপ
শুধু ফসল, শূন্য ঘরে; ঘোরে-ফেরে
কান্নায় কৃষকের ক্ষুধিতমায়া,
ঘরকন্নার বীজতলা, ঝাঁজে উঠে ভরে
কামধেনু নিয়ে গেছে তারে লোভে, পাপে,
সন্তাপে নাই তার ডর, তার চায় শুধুই ঘর
সুখেন্দ্রীয়ধেনু তার বর---আর সব মোহ মুগ্ধ করেনি
বরং মুক্তি দিয়েছে বেদনাক্ষয়
বিলাপবাড়িতে কাঁচাধানের গন্ধ গর্ভবতীর নাকের গন্ধের মতো মনে লেগে থাকে
রেখে যাওয়া সুটকেস, শাড়িটিও কাঁদে,
কাঁদে তিব্বত পাউডার, আলতা-স্নো
মুখে তার এক সুর, আশ্রয় তারে দিয়েছে অসুখ
তাই আশ্রয়হীনে তার ভীষণ সুখ
এতোদিন মন-মদিরে প্রতিদিন যত্নে রেখেছিলো যারে,
ঘামের দাম--- ঘুমের দরে,আলস্য অবহেলায় দিয়েছে দূরে
রাঙাল যুবক তার রাজা হয়েছে---রাণী সুখে আছে!
এতোদিন যে যুবতি লালফিতের বেনী দুলিয়ে
বাণ মারতো যুবকের
সে এখন তার নয়, সে লাভ করেছে
কৃষাণীর লোভ
এখন যুবতির স্বপ্ন একা, উর্বর উঠোন ফাঁকা
কৃষকের দু:খ ধুয়ায় ওড়ে---
সান্ত্বনা মেলে ত্রিবেণীর হেমন্তে;
ধানঘ্রাণের কামনায়
এক বিপ্রতীপ সন্ধ্যায় নগ্ন নদীতীরে
অভিষেক হয়ে গেলো তাদের!